চক্রবৎ পরিবর্তন্তে সুখানি দুঃখাণি চ। এ গল্পের মূল এই আপ্ত-র মধ্যে নিহিত। যে অনির্বাণ শৈশবে অপমানিত হতে দেখে বাবাকে, সেই অনির্বাণ-ই সময়ের ফেরে বিচারক—আক্ষরিক অর্থে।
রসগোল্লাটা তিন আঙুলে ধরে মুখে পুরতে গিয়ে থমকে গেল অনির্বাণ। ছোটবেলা থেকেই রসগোল্লা ওর খুব পছন্দের মিষ্টি। বাবার কোথাও নেমন্তন্ন থাকলে কত বার বিয়েবাড়ি যাবে বলে বায়না ধরেছে ও। বাবা রাজি না হলে কান্না জুড়ে দিত। শেষে হস্তক্ষেপ করত মা। মায়ের অনুরোধে দু-এক বার বাবা ওকে বিনা নেমন্তন্নয় বিয়েবাড়ি নিয়েও গিয়েছিল। সেই সময় অবশ্য এই সব চলত। তখন বিনা নেমন্তন্নয় কারও অনুষ্ঠানবাড়িতে ঢুকে যাওয়া যেত বেমালুম। মধ্যবিত্তের আত্মসম্মানবোধে ততটা ঘা লাগত না। সেই সময় চারপাশের লোকজনও এটাকে প্রশ্রয় দিত। বাড়ির কর্তারাও এ নিয়ে কিছু বলতেন না। আর যারা যেত, তারাও মহানন্দে ভোজ খেত। উপহারের জন্য কোনও খরচাখরচও ছিল না। তবে অনির্বাণের বাবা বরাবরই অন্য মানুষ। আত্মসম্মানবোধ প্রবল। কিন্তু ছোটবেলায় তো আর অনির্বাণ এ সব বুঝত না। ফলে কখনও আবদার করে ফেলত।
সেই সময় এলাকার সব অনুষ্ঠানবাড়িতেই শেষ পাতে রসগোল্লা আর দই থাকতই থাকত। আর অবস্থাপন্ন ঘর হলে তো কথাই নেই। নানা রকম মিষ্টির এলাহি আয়োজন। রসগোল্লা, পান্তোয়া তো বটেই, সঙ্গে থাকত দইও। কোথাও কোথাও তার বদলে রসমালাই। ছানা কিনে আনা হত আড়ত থেকে। তার পর বাড়িতেই বসত ভিয়েন। দোকান থেকে মিষ্টি কিনে খাওয়ানোর চল ছিল না একদম। পৈতেবাড়ি হলে বাড়তি পাওনা ছিল পায়েস। তবে রসমালাই বেশ সুখি মিষ্টি। তাতে নজর রাখতে হত বেশি। ঠান্ডা জায়গায় রাখতে হত। গরমকালে রসমালাই নষ্ট হয়ে যেত খুব। টক হয়ে যেত। খাওয়া যেত না মোটে। সে এক বিপর্যয়! নিমন্ত্রিতদের কাছে মাথা হেঁট। এ নিয়ে নিজের বাড়িতেই বাবা-কাকাদের মুখে সে গল্প শুনেছে বিস্তর। ওর নিজেরও এক বার এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল। ডাক্তারদাদুর ছেলের বিয়েতে গিয়ে প্রথম রসমালাই খেয়েছিল সে। তবে সেটা টকে গিয়েছিল। অন্যান্যরা ঠিকই ধরতে পেরেছিল। কিন্তু অনির্বাণ প্রথমবার রসমালাই খেয়েছিল বলে একদম বুঝতে পারেনি। ধরতেই পারেনি রসমালাইয়ের স্বাদ আসলে স্বর্গীয়। এমন টক টক নয় মোটে। পর দিন প্রচণ্ড পেটখারাপ হয়েছিল ওর।
এমনই এক দিন, বাবার সঙ্গে বিনা নেমন্তন্নয় বিয়েবাড়ি যাওয়ার বায়না ধরেছিল অনির্বাণ। বাবার বন্ধু পরেশ কাকার বোনের বিয়ে। ওরা অবস্থাপন্ন ঘর। জমিজায়গা তো আছেই। তা ছাড়া পরেশ কাকারা ছয় ভাইই সরকারি চাকুরে। বড়লোক বলতে যা বোঝাই, তাইই। কালার টিভি, ফ্রিজ, টেলিফোন এ সবই ওদের বাড়িতে আছে। এক মাত্র বোনের বিয়েতে ওরা খরচও করেছিল প্রচুর। বাবা সন্ধ্যায় বিয়েবাড়ি যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। হঠাৎ পড়াশোনা ফেলে অনির্বাণ বায়না শুরু করল বাবার সঙ্গে বিয়েবাড়ি যাওয়ার জন্য। ওর বাবা কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না। শেষে মায়ের হস্তক্ষেপে বাবার মন গলল। বাবা ওকে বিয়েবাড়ি নিয়ে যেতে রাজি হল। পুজোয় কেনা লাল হাফহাতা জামা আর কালো হাফপ্যান্টটা পরে অনির্বাণ বেরিয়ে পড়ল বাবার সঙ্গে। লাল জামাটার আবার দুটো বোতাম লাল নয়, কালো। জামা পরে খেলধূলা করার সময় ছিঁড়ে গিয়েছে। জামার আসল বোতাম খুলে যাওয়ায় ওর মা কালো বোতাম লাগিয়ে দিয়েছিল সূচ-সুতো দিযে। প্রথম প্রথম এটা মেনে নিতে পারত না অনির্বাণ। পাড়ার টেলরের দোকানে লাল বোতামের খোঁজ করেছিল ও। কিন্তু ম্যাচ করা বোতাম পাওয়া যায়নি কিছুতেই। ওর দোকান থেকে জামাকাপড় করানো হয় না বলে দোকানদারও বিশেষ পাত্তা দেয়নি। সেই জামাটা পরে বিয়েবাড়ি যেতে মনটা খুঁতখুঁত করছিল অনির্বাণের৷ কিন্তু কিছু করারও নেই। কারণ, আর ভাল জামা নেই ওর। তবে রসগোল্লার কথা ভেবে সেই দুর্ভাবনা কমে গেল অনেক। আর বাকি যে টুকু ছিল তা বাবার সঙ্গে হেঁটে যেতে যেতে সেই খুঁতখুঁতুনিটাও শেষমেশ বেরিয়ে গেল ওর মাথা থেকে। পরেশ কাকাদের বাড়িটা পরের পাড়ায়। মিনিট পাঁচ-সাত হেঁটে যেতে হয় বাবা আগে আগে যাচ্ছিল চর্ট জ্বেলে। পিছন পিছন অনির্বাণ। বাবা বার বার বলছিল, ‘‘রাস্তার মাঝখান দিয়ে আয়। ঘাসের উপর দিয়ে হাঁটিস না।’’ এর কারণও আছে। গরমের সন্ধ্যায় গ্রামের রাস্তায় সাপখোপের উৎপাত তো কম নয়!
কেতাব-ই'র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন manuscript.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’।
পরেশকাকার বোন কৃষ্ণা পিসি। বাবা একটা বই কৃষ্ণা পিসিকে উপহার দিয়েছিল সে দিন। কী বই তা অবশ্য জানে না অনির্বাণ। তবে লাল-সাদা কাগজে মোড়া। লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা। এটা তার ভালরকম মনে আছে। বাবা ওই ভাবেই বইটা গকিনে এনেছিল বাজার থেকে। অনির্বাণ বইটা দেখার বায়না ধরেছিল খুব। কিন্তু সাজানো গোছানো ওই প্যাকেটটা খুলতে বাবা-মা কেউই রাজি হয়নি।
কৃষ্ণা পিসিদের বাড়িটা বিরাট। দোতলা। বেশ কয়েকটা ঘর। গোটা বাড়িটা আলো, ফুল দিয়ে খুব সাজানো হয়েছিল সে দিন। এমন সাজসজ্জা সেই প্রথম দেখেছিল অনির্বাণ। ওদের বাড়ির বিয়েয় তো সামান্য আয়োজন হয় বরাবর। আরও ছোট হলেও, সেজ কাকা ও পিসিমণির বিয়ের কথা ভালই মনে আছে অনির্বাণের।
বাবা বইটা হাতে তুলে দেওয়ার পর, অনির্বাণকে দেখে কাছে টেনে নিয়েছিল কৃষ্ণাপিসি। গাল টিপে আদরও করেছিল। এর মধ্যেই কোথা থেকে হাজির হল পরেশকাকা। বাবা ও তার হাত ধরে টানতে টানতে খাওয়ার প্যান্ডেলের দিকে নিয়ে চলে গেল। গরমকাল। তখনও ব্যাচ পূর্ণ হয়নি। দু’এক জন বসেছে। তাদের ট্রেন ধরার তাড়া আছে। সেই রাত ৮টাতেই ওদের দু’জনকে জোর করে খেতে বসিয়ে দিয়েছিল পরেশ কাকা। বলেছিল, “এখনই বসে পড় আশিস। পরে ভিড় বেড়ে যাবে। অনেক লোক। ছেলেটাকে খাইয়ে নে ভাল করে। ওর খিদে পেয়ে গিয়েছে।”
চন্দননগরের মনু ঠাকুরের রান্না। তখন খুব বড়লোক ঘর ছাড়া মনুকে রাঁধুনি ভাড়া করতে পারত না। ওর পারিশ্রমিক ছিল অনেক। রাঁধুনি হিসাবে তার দাপটও ছিল। বা়ডির কর্তা মুখ খোলার সাহস পেত না। সে দিন পাড়ার ছেলেরাই পরিবেশন করছিল কোমরে গামছা বেঁধে। কারও কোমরে আবার তোয়ালে। হাতে হাতে লুচির ঝুড়ি আর বেগুনভাজার ট্রে। সেই সময়ের রেওয়াজই তাই। নিজেদের বাড়িতেও একই ছবি দেখেছে অনির্বাণ। এই সময় ওর পাতে একটা আর বাবার পাতে দুটো লুচি দিয়ে চলে গেল ধর্মদাস কাকা। পিছনেই বেগুনভাজার ট্রে হাতে বিপুল কাকা। খাওয়াদাওয়া চলছে। খাসির মাংস এল। এর পর চাটনি আর পাঁপড়। এক সময় রসগোল্লাও এসে গেল। বালতি ভর্তি রসগোল্লা দেখে চোখ ঝলসে উঠল অনির্বাণের। ভাঁজ করা লোহার রডের উপরে পাতা লম্বা টেবল। উপরে সামান্য জল ছিটিয়ে রোল কাগজ পাতা। তার উপরে শালপাতার থালা। জল মাটির বড় ভাঁড়ে। রসগোল্লা দেখেই অনির্বাণ বাবাকে বলল, “বাবা, আজ আমি ১০টা রসগোল্লা খাব।” বাবা বলে উঠল, “পেট বুঝে খা। বেশি লোভ করিস না।” টেবলে হাত পৌঁছচ্ছিল না অনির্বাণের। উৎসাহে মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে পড়ছিল। আসলে দাঁড়ালে টেবলের সঙ্গে ওর উচ্চতা একেবারে লাগসই হয়। তখন অনির্বাণ কতই বা আর লম্বা। স্কুলের দাদারা সকলেই ওর মাথায় টুক করে মেরে চলে যেত।
ওদের পাশেই বসেছিল তড়িৎ জেঠু। ওর সেলুনেই বাবার আড্ডা, তাস পেটানো। অনির্বাণ ওর দোকানেই নিয়ম করে দাদুর মতো বাটি ছাঁট দেয়। বাবাই রবিবার ওর হাত ধরে নিয়ে গিয়ে চুল কাটিয়ে আনে। ওর খাওয়ার উৎসাহ দেখে তড়িৎ জেঠু বলে উঠল, “গুন্ডা, আজ যদি তুই ১০টা রসগোল্লা খাস, তা হলে কাল আমি তোকে আরও ৫টা খাওয়াব।” সে দিন গুনে গুনে দশটা রসগোল্লা খেয়েও ফেলল অনির্বাণ। আরও দুটো খেতে পারত। কিন্তু বাবা ওকে জোর করে তুলে দিল। বলল, “আর খাস না। পেটখারাপ করবে।” মিষ্টি পানটা আর খাওয়া হল না ওর।
ফেরার সময় পরেশকাকার দাদার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল অনির্বাণের বাবার। ওকে দেখিয়ে অসীম জেঠু বাবাকে বলল, “কী গো আশিস, তোমার ছেলের পেট ভরল? আমি দূর থেকে ওর কাণ্ড দেখছিলাম।” তার পর অনির্বাণের দিকে তাকিয়ে অসীম জেঠু বলল, “দেখো তো কী কাণ্ড! তোমাকে তো আমি নেমন্তন্ন করতেই ভুলে গিয়েছিলাম। তবে কাল যেন পেটখারাপ না হয়। তা হলে অকারণ স্কুল কামাই হবে।” অসীম জেঠুর প্রতিটা শব্দ এখনও স্পষ্ট মনে আছে অনির্বাণের। কথাটা শুনে ওর বাবার ফর্সা মুখটা কেমন লাল হয়ে গেল। হাসিটা মিলিয়ে গেল। তার পরই একদম চুপ।
এর পর, অসীম জেঠুকে বিদায় জানিয়ে অনির্বাণের নড়া ধরে টানতে টানতে বিয়েবাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ল ওর বাবা। ফেরার সময় একটাও কথা বলল না। অথচ বিয়েবাড়ি যাওয়ার সময় আকাশের দিকে তাকিয়ে এই বাবাই তারা চেনাচ্ছিল তাকে। কী এমন হল বাবার! সারা রাস্তা এই চিন্তা তাড়িয়ে বেড়াল অনির্বাণকে। তবে ওই শেষ বার। এর পর থেকে আর কোথাও বিনা নেমন্তন্নে অনির্বাণকে নিয়ে যায়নি বাবা। ও-ও আর বাবার কাছে বায়না করেনি। কী হয়েছিল সে দিন তা সেটা স্পষ্ট বোঝেনি অনির্বাণ। তবে এটা বুঝেছিল, কিছু একটা হয়েছে বাবার কিন্তু সেটা যে ঠিক কী তার নাগাল তখনও পায়নি অনির্বাণ। তবে এখন বুঝতে পারে। কোথায় ঘা লেগেছিল বাবার। তড়িৎ জেঠু কিন্তু কথা রেখেছিল। পর দিন পাঁচটা রসগোল্লা বাড়িতে এসে তুলে দিয়েছিল ওর হাতে। বলেছিল, “খা গুন্ডা। এটা তোর প্রাইজ।”
সেই অসীম জেঠুদের বাড়িতেই বছর তিরিশ বাদে পা রেখেছে অনির্বাণ। মাঝখানে অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু চৌধুরীবাড়ির জেল্লা কিছু কমেনি। তবে এই বাড়িতে এখন ধকল যাচ্ছে অনেক। সেটা অনির্বাণ জানে। জমিজায়গা নিয়ে কাকা-ভাইপোদের মধ্যে শরিকি বিবাদ বেধেছে। সে যাই হোক, এ বারও অনুষ্ঠানে চৌধুরী বাড়ির জেল্লা তেমনই, বছর তিরিশ আগের মতোই। দোতলা বাড়ি আর তার চারপাশটা দারুণ সাজানো। খাওয়ার জায়গাটা তো দারুণ ঝকঝকে। শহর থেকে কেটারার এসেছে। তারা ধোপদুরস্ত পোশাক পরে সাহেবি কেতায় খাবার দিচ্ছে। বুফে সিস্টেমও রয়েছে। অসীম জেঠুর নাতনির অন্নপ্রাশন। এ বার জেঠু নিজে গিয়ে নেমন্তন্ন করে এসেছে ওদের। বাড়ির সকলের নেমন্তন্ন। তবে একাই এসেছে অনির্বাণ। আর কারও সময় হয়নি। সকলেই খুব ব্যস্ত এখন। আর অনির্বাণের বাবা-মাও গত হয়েছেন। ফলে সম্পর্কের সাত পুরনো সুতো এখন অনেক আলগা। তবে এই বাড়িটা অনির্বাণের কাছে চিরকালই একটা রহস্যের। তিরিশ বছর বাদে সেই রহস্যের সামনে দাঁড়িয়ে তার গভীরতা মাপার চেষ্টা করছিল অনির্বাণ। শৈশবের সেই সব রহস্য আজ তিরিশ বছর বাদে অনেকটা স্পষ্ট হয়ে গেল ওর কাছে। রসগোল্লাটা খাওয়ার জন্য মুখের সামনে তুলে ধরেও শেষে পাতে নামিয়ে রাখল সে। খেতে আর ইচ্ছা করছিল না ওর। মুখটা যেন কেমন তিতকুটে হয়ে গিয়েছে।
চারপাশের লোকজনকে এড়াতেই প্যান্ডেলের একদম কোণের দিকে বসেছে অনির্বাণ। চার জন করে বসার টেবল। আগের মতো লম্বা টেবল নয়। টেবলে টেবলে ফুলের বোকে। প্যান্ডেলটার ভিতরে অন্ধকার থাকায় আলোর ব্যবস্থাও রয়েছে। অনির্বাণের সঙ্গে যারা খেতে বসেছে তারা ওর অচেনা ফলে খাওয়ার সময় কথাবার্তা হওয়ার কোনও সুযোগও নেই। আর ও নিজেও খুব কম কথার মানুষ। তবে খাওয়ার সময় অন্তত দু'বার অনির্বাণের কাছে এসেছে অসীম জেঠু। দূর থেকেও তার দিকে নজর রেখে গিয়েছে। প্রতি বারই ওর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করেছে, “রান্নাবান্না কেমন হয়েছে? তোমার ঠিকঠাক লেগেছে তো?” উত্তরে এক দিকের গাল সরিয়ে নি:শব্দে হেসে ঘাড় নেড়েছে অনির্বাণ। এ নিয়ে কথা খরচ করতে চায় না সে। নেমন্তন্ন রক্ষাতেই তো তার আসা। আর হাজার চেষ্টা করেও শৈশবের সেই সময়, সেই রসগোল্লার স্বাদ ফিরে আসবে না তার জিভে।
এই সব ভাবতে ভাবতেই খাওয়ার টেবল ছেড়ে উঠে পড়ল অনির্বাণ। ব্যাচ শেষ হওয়ার কিছুটা আগেই হাত মুখ ধুয়ে নিল সে। দূর থেকে তা দেখতে পেয়ে হাঁ হাঁ করে ছুটে এলেন অসীম জেঠু। গলায় উদ্বেগ মিশিয়ে বললেন, “কী গো? তুমি খাবার ছেড়ে মাঝপথে উঠে এলে? খাবারদাবার ভাল হয়নি বুঝি? না কি কিছু হয়েছে?” অনির্বাণ বলল, “না, না। সে সব কিছু নয়। সব ঠিক আছে। আমি আর পারলাম না। এখন কম খাই।” তার পর অল্প হেসে বলল, ‘‘বয়স বাড়ছে জেঠু। এখন তো সংযমের সময়।’’ অসীম জেঠু এ বার মিহি গলায় বলল, “কিন্তু তোমার আর বয়স কত? এখনই এত নিয়মকানুন! কিছুই তো খেলে না তুমি? আর কয়েকটা রসগোল্লা খাও? আরও নানা রকম মিষ্টিও আছে। ছোটবেলায় রসগোল্লা খেতে তুমি যে কী ভালবাসতে! মনে আছে…?”
অসীম জ্যেঠুর কথাটা শুনেই সেই স্মৃতি আর এক বার মনে পড়ে গেল অনির্বাণের। ওর বুকে একটা সূক্ষ্ম কাঁটা বিঁধে গেল। হালকা হেসে প্যান্ডেল থেকে বেরিয়ে এল সে। চৌধুরী বাড়ির চৌহদ্দির বাইরে বেরিয়ে সিগারেট ধরিয়ে গাড়ির রিমোটটায় চাপ দিল। একটা যান্ত্রিক শব্দ উঠল। এ বার ওকে যেতে হবে কোর্টে। গ্রাম থেকে সদর শহর। মিনিট চল্লিশের পথ। অসীম জেঠুদের জমিজমা নিয়ে ঘোরতর মামলা চলছে। সে প্রায় বছর পাঁচেক ধরে শরিকি গোলমাল। ভাইপোরা বড় হতে না হতেই যৌথ পরিবার ভেঙে টুকরো টুকরো। সেই মামলা এখন অনির্বাণের এজলাসেই।
কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই, ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন।
এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।
Claudine Castillo
2 সপ্তাহ আগেHi, Your brand deserves to stand out, and we’re here to help. At Global Wide PR, we specialize in connecting businesses with top media platforms to increase visibility and credibility. As a gesture to get started, we’re offering a free article on Digital Journal—a great way to showcase your business to a wider audience. For those looking to maximize exposure, we can also feature your brand on affiliates of FOX, NBC, CBS, ABC, and 300+ other sites for just $297. These placements can help you build trust and attract new customers. To take advantage of this opportunity, click the link below to sign up on our site, and we’ll get back to you ASAP: https://bit.ly/globalwidpr Looking forward to helping your brand shine! Best regards, Claudine Global Wide PR We understand that you may wish to unsubscribe. To unsubscribe from our list, please fill out the form here with your website address: bit. ly/unsubscribemeurl